খোকসা উপজেলা

খোকসার পরিচয়

খোকসা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার একটি উপজেলা। ১৯৪৭ সালের পুর্বে বর্তমান খোকসা থানা ছিলো অবিভক্ত বাংলাদেশের প্রেসিডেন্সী বিভাগের অন্যতম নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া মহকুমার অংশ। খোকসার যতদুর প্রাচীন ইতিহাস জানা যায়, তাতে করে দেখা যায়, নবাব মুর্শীদ কুলী খাঁর নবাবী আমলের শেষদিকে খোকসা ছিলো বর্তমান ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার নলডাঙ্গা জমিদারের অধীনে।

১৮২৭ সালে খোকসা থানা যশোর জেলা থেকে পাবনা জেলার অন্তর্ভুক্ত হয় আর ১৮৫৭ সালে খোকসা থানাকে কুমারখালী ( পাবনা জেলা ) অধীনে আনা হয়। আবার ১৮৭১ সালে খোকসা থানাকে নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া মহকুমা ভুক্ত করা হয়।

খোকসা থানা উত্তর দিকে পদ্মা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। ইহার পশ্চিম দিকে কুমারখালী (কুষ্টিয়া) থানা। বর্তমান ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানা এই থানার দক্ষিন-পশ্চিম এবং ফরিদপুর জেলার পাংশা থানা উত্তর পুর্বদিকে অবস্থিত। পোড়াদহ থেকে পুর্বদিকে প্রবাহিত গোয়ালন্দ ব্রডগেজ রেললাইন এই থানাকে বিভক্ত করেছে। পদ্মার শাখা গড়াই নদীও খোকশা থানার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত।

খোকসা নাম করণের ইতিহাস

খোকসা নামের উৎপত্তি কোথা থেকে তার সঠিক কোন ইতিহাস এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে যতদুর শোনা যায়, খোকা শাহ নামের এক সাধকের নাম থেকে খোকসা নামের উৎপত্তি হয়েছে। আবার কারও কারও মতে খোকসা নামক গাছের থেকে খোকসা নামের উৎপত্তি। তবে এ এলাকা থেকে এ গাছ অনেক আগেই বিলুপ্ত হলেও বর্তমান রংপুর অঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় খোকসা নামক গাছ এখনও আছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। 

অপর এক কাহিনী থেকে জানা যায়, বর্তমান খোকসার কালী নাকি জনৈক তান্ত্রিক সাধুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। সেই নৈষ্ঠ্যিক আত্তপ্রচার বিমুখ তান্ত্রিক সাধুটি গড়াই নদীর তীরে খোকসা গাছ দ্বারা বেষ্টিত একটি নির্জন স্থানে প্রথম কালী পূজা আরম্ভ করে। এই নির্জন জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে সে সময় কেই যেত না জনৈক জমিদার পুত্রের সর্প দংশনের পর অজ্ঞানাবস্থায় এই কালী সাধকের নিকট আনা হয় এবং উক্ত সাধক সংজ্ঞাহীন যুবকটিকে কালীর পদতলে শুইয়ে দিয়ে দুয়ার বন্ধ করে দেয়। অতঃপর সাধকের সাধনায় কালীর কৃপায় যুবকটি বেঁচে উঠে। যাবতীয় খবর পেয়ে জমিদার আসেন এবং পুত্রকে ফিরে পেয়ে কালীর প্রতি ভক্তি-আপ্লুত হয়ে উঠেন। তারপর তান্ত্রিক সাধুর নির্দেশমত জমিদার মাঘী আমাবশ্যায় এক রাতে সাড়ম্বরে কালীর পূজা দেন। সেই থেকে খোকসা গাছ বেষ্টিত এই কালীর নামহয় ‘খোকসার কালী’ এবং উক্ত স্থানও খোকসা নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

ভৌগলিক পরিচিতি

খোকসা উপজেলার পূর্বে  রাজবাড়ী জেলাধীন পাংশা উপজেলা, পশ্চিমে-কুমারখালী উপজেলা, উত্তরে পাবনা সদর উপজেলা এবং দক্ষিনে-ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলা অবস্থিত। *সর্বশেষ হালানাগাদ ২০২২ (ইং) 

জেলা সদর হতে দূরত্বসড়ক পথে ২৪ কি:মি:, রেলপথে ২২ কি:মি:
আয়তন১১৫.৬০ বর্গ কিলোমিটার
জনসংখ্যা (জনশুমারি-২০২২)*১,৩৪,০১১ জন (প্রায়)
পুরুষ (প্রায়)৬৯,৬৮৬ জন
মহিলা (প্রায়)৬৪,৩২৫ জন
মোট ভোটার সংখ্যা (২০২২ হালনাগাদ)৯৬৪৯৭ জন
পুরুষ৫০৮৩৭ জন
মহিলা৪৫৬৬০ জন
নির্বাচনী এলাকা৭৮ কুষ্টিয়া (৪)
গ্রাম১১০ টি
মৌজা৮৫ টি
ইউনিয়ন৯ টি
পৌরসভা১ টি
এতিমখানা সরকারী০ টি
এতিমখানা বে-সরকারী৪ টি
মসজিদ৪৭১ টি
মন্দির৬০ টি
নদ-নদী২ টি (পদ্মা ও গড়াই)
হাওর১ টি, সিরাজপুর হাওর
হাট-বাজার৩৪ টি
ব্যাংক শাখা৬ টি
পোস্ট অফিস/সাব পোঃ অফিস১ টি, সাব পো: ৯টি
টেলিফোন এক্সচেঞ্জ১ টি
Scroll to Top